পাঁজিয়া বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের খুলনা বিভাগের যশোর জেলাধীন কেশবপুর উপজেলার ৭নং পাঁজিয়া ইউনিয়নের একটি গ্রাম। সুদূর অতীত থেকে এই গ্রামের ঐতিহ্য রয়েছে। ইংরেজ আমলে ছোট-বড় মিলে ডজন খানেক জমিদার এই গ্রামে বসবাস করত। এদের মধ্যে দু’টি জমিদার বাড়ি প্রসিদ্ধ। বাড়ি দু’টির নামও যথাক্রমে পুরাতন বাড়ি ও নতুন বাড়ি। নতুন বাড়ির জমিদারের নাম ছিল রাজা পরেশনাথ বসু। পরেশনাথ বসু মুর্শিদকুলি খাঁর দেওয়ান ছিলেন। রাজা পরেশনাথ বসু হাতিতে চড়ে বেড়াতেন। কালের চক্রে জমিদারি বিলুপ্ত হওয়ার পর তার বংশধররা পর্যায়ক্রমে কলকাতায় চলে যান। রাজার বাড়ির ইটে কেশবপুর কাটাখালি সড়ক নির্মিত হয়। এই বংশের শেষ বংশধর শ্রী রবীন্দ্রনাথ বসু ও শ্রী সুধারানী বসু ৯ ডিসেম্বর ১৯৬৩ সালে তৎকালীন পাঁজিয়া হাইস্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সেক্রেটারী শ্রী রবি কুমার সরকারের নামে পাঁজিয়া হাইস্কুল স্থানান্তরিত হয়ে রাজা পরেশনাথ বসুর নামে নামিত হওয়ার শর্তে মাাদরডাঙ্গা মৌজার ৫একর ৮৭ শতক জমি দানপত্র রেজিষ্ট্রী করে দেন। দলিলের শর্তানুসারে স্কুল স্থানান্তরিত করার লক্ষ্যে ‘L’ প্যাটানে ১ তলা ভবনের কাজ শুরু হয়। বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে স্কুল স্থানান্তরিত করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘদিন অব্যবহৃরিত থাকার কারণে ভবনের ছাদ নষ্ট হয়ে যায়। পার্শ্ববতী মকছেদ আলী মাষ্টার সহ এলাকার বিশিষ্ট জনেরা এই স্থানে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার কথা ভাবতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৩ সালে তৎকালীন সরকার দলীয় লোকজনের সমর্থনে জনাব এন্তাজ আলী গাজীকে সভাপতি ও জনাব আবু নইমকে সেক্রেটারী করে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট কলেজ প্রতিষ্ঠার একটি কমিটি গঠিত হয়। ঐ কমিটিতে সর্বদলীয় লোক ছিল। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদের জন্য তৎকালীন কেশবপুর কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল জনাব কাওছার আলীর নাম ঘোষণা করা হলেও তিনি একদিনও ঐ দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। পরে চুকনগর কলেজের প্রভাষক কফিল উদ্দীনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব অর্পন করা হলে তিনিও কিছুদিন অগোছালো ভাবে দায়িত্ব পালন করে কলেজ প্রতিষ্ঠায় হতাশা ব্যক্ত করে দায়িত্ব থেকে সরে যান।
অবশেষে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা শেষে বাংলা প্রভাষক মোঃ রুহুল আমিনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করে কলেজ পরিচালনা কার্যক্রম চলতে থাকে। কলেজের সর্বপ্রথম ক্লাস শুরু হয় ০১ জানুয়ারী ১৯৯৪। প্রথম ক্লাস করেন তৎকালীন বাংলা প্রভাষক মোঃ রুহুল আমিন। প্রথম ক্লাসে কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্রের উপর আলোচনা হয়।