বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। অসংখ্য নদী এদেশের উপর দিয়ে জালের মত বিছিয়ে রয়েছে। নদীর পলি দিয়ে এদেশ গঠিত তাই এদেশকে নদী মাতৃক দেশ বলা হয়। বাংলাদেশ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ব-দ্বীপ। নদী বলতে ঐ সব জলস্রোতকে বুঝি, যে জলস্রোত কোন পর্বত, হৃদ প্রভৃতি হতে উৎপন্ন হয়ে নানা জনপদের উপর দিয়ে নূন্যতম চারক্রোস প্রবাহিত হয়ে অন্য কোন জলাশয়ে পতিত হয়। নদীবাহিত পলি দ্বারা সমগ্র বাংলাদেশ গঠিত। হাজার হাজার বছর ধরে নদী-উপনদী-শাখানদী দিয়ে গঙ্গা জোনের দু’পাশের সকল উঁচু এলাকার বৃষ্টি ও হিমবাহুর স্রোতের দ্বারা পলি নদীতে পতিত হতে থাকে। একই সাথে জোয়ার-ভাটা দিনে (২৪ ঘণ্টায়) দু’বার ভূমি গঠন প্রক্রিয়ার কাজ অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল তথা যশোর-খুলনা শত ভাগই পলি দ্বারা গঠিত। মানুষ মিষ্টি পানিকেন্দ্রিক বসতি গড়ে তুলে কৃষিকাজ করার পাশাপাশি শিক্ষা ও সংষ্কৃতিক সভ্যতা গড়ে তুলতে থাকে। মিশরের মেসোপটেমিও অনুকরণে ভারত ও পরে দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিওনে প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্ব থেকে জনবসতি ও বহুমুখি পানি ব্যবস্থাপণার মাধ্যমে স্বনির্ভর গ্রাম গড়ে উঠেছিল। অসময় ও অপ্রয়োজনে পানি ঢুকতে না দেওয়া, আটকে রাখা, নদী সংযোগ বিচ্ছিন্ন, উৎসমুখ বন্ধ, আড় বাঁধ দেওয়া, জলোচ্ছ্বাস ও লোনা প্রতিরোধের জন্য ভেড়ী বাঁধ নির্মাণ ও ফসল রক্ষার জন্য অষ্ঠমাসের বাঁধ নির্মাণ করত। নোনা পানি নিয়ন্ত্রণের জন্য কাঠের বাক্স ব্যবহার করত। এই কাঠের বাক্সকে “আগরি” বলা হত। ‘ষাট’ এর দশকে ওয়াপদা আসার পূর্বে কৃষকেরা ফসলি জমিতে পানি নিয়ন্ত্রণের জন্য এটা ব্যবহার করত। এই আগরির দু’মুখে দুটো কপাট এমন ভাবে লাগানো হত যে, জোয়ার-ভাটার সময় এটা সহজেই নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ফসলি জমিতে পানি ঢুকানো ও বের করা যেত। একই সাথে জনসাধারণের চলাচলের জন্য নদী ও খালের উপর সাঁকো, ব্রীজ, কালভার্ট নির্মাণ করত। এসব জনকল্যাণমূলক কাজে সুদূর অতীতে সরকার প্রধান থেকে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সকল দায়িত্বশীল ও বিবেকবান ব্যক্তিরা কম-বেশী প্রায় সকলেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকত।
জনগণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অষ্টমাসের বাঁধের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। জনগণ তাদের বেঁচে থাকার তাগিদে আট মাস জোয়ার-ভাটার উপর নিয়ন্ত্রণ রেখে তাদের ফসল ঘরে তুলে নিজেরাই বাঁধ কেটে পলিযুক্ত জোয়ারের পানি আসার সুযোগ করে দিত। ফলে পলিযুক্ত জোয়ারের পানি বিস্তৃর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে চারণ ভূমিতে পলি অবক্ষেপিত হত। ফলে ঐ সকল প্লাবনভূমি ক্রমান্বয় উঁচু হওয়ার পাশাপাশি প্রচুর মৎস্য সম্পদ উৎপাদিত হত। দরিদ্র, ভূমিহীন, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত লোকেরা নিজেদের মাছের চাহিদা মিটিয়েও অতিরিক্ত অংশ বিক্রয়ের মাধ্যমে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করত। সারা দেশে নদী-নালা, খাল-বিল উন্মুক্ত থাকার কারণে মাঝে মধ্যে বন্যা, সাইক্লোন ও জলোচ্ছাসের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলেও সেগুলো সাময়িক অসুবিধাগুলি দূর করে প্রকৃতিকে সংগে নিয়ে মানুষ বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যেত। প্রকৃতি সাময়িক কষ্ট দিলেও তার সম্পদের দ্বারা মানুষ, গবাদিপশু, পশুপাখি সকলকে লালন-পালন করত। এভাবে সুন্দরবনসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল ভূমিগঠন, প্রাকৃতিক সম্পদের সমৃদ্ধি ও জীববৈচিত্র্যের গঠন প্রক্রিয়া চলতে থাকে।
১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ ভাগের পর পাকিস্তান নামে যে রাষ্ট্রটি গঠিত হয় তার পূর্বভাগ পূর্ব-পাকিস্তান নামে খ্যাত হয়। শাসক শ্রেণী ছিল পশ্চিম পাকিস্তানিরা। তাদের সংগে পূর্ব-পাকিস্তানের মানুষের শুধুমাত্র ধর্ম ছাড়া আর কিছুতেই মিল ছিল না। বিশেষ করে ভূমি ও জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। দেশ ভাগের পর দূর্ভাগ্যক্রমে ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত পর পর তিন বছর এদেশে ব্যাপক বন্যায় প্রাণ ও সম্পদের হানি হয়। এ কারণে তৎকালীন সরকার নদী শাসনের ভাবনা ভাবতে থাকেন। রাজনৈতিক অস্থিতিশিলতার মধ্যে ১৯৫৭ সালে ওয়াটার কন্ট্রোল কমিশন (ক্রুগমিশন) রিপোর্ট প্রকাশ করে। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান ক্ষমতা গ্রহণ করেন। পরবর্তী বছর ১৯৫৯ সালের মে মাসে ‘ওয়াপদা” গঠন করা হয়। একই বছর নভেম্বর মাসে ইকো প্লানিং ও ডিজাইন করে। শুরু হয় ২০ বছর মেয়াদী প্রকল্পের কাজ। ১৯৬০ সালে ওয়াপদা কাজ শুরু করে।
ওয়াপদার গৃহীত কর্মকাণ্ডকে তৎকালিন সময়েও কিছু মানুষ বিরোধিতা করে। কিন্তু সরকারী আনুকূল্যে, দূরদর্শিতার অভাব, আত্মকেন্দ্রিকতা ও স্বার্থপরতার কারণে অধিকাংশ সচেতন মানুষ সরকারের সংগে সহযোগিতা করে। ওয়াপদা’র গৃহীত প্রকল্পকে আমি সেই লোভী কৃষকের সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁসের গল্পের মত মনে করি। সাময়িক লাভের আশায় হাজার-হাজার বছরের পুরনো প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হয়ে নদী শাসনে আমরা নেমে পড়ি। শুরু হয় নদী শাসনের নামে নদী হত্যা। দেশের শতকরা ৮০ ভাগসহ গাঙ্গেও ডেলটা শতকরা ১০০ ভাগ পললায়িত। যা বরফ যুগের পর থেকে সোয়া এক হাজার বছর ধরে গঙ্গা রিডিতে পললায়নে রত। যার নাম গাঙ্গেয় ডেলটা। নদীর বৈশিষ্ট্য হল নিম্ন ভূমিতে গড়ানো। সাধারণতঃ নদী তার বহনকৃত পলি দ্বারা ভূমি গঠন প্রক্রিয়া শেষ করে মারা যায়। কোন কোন সময় ভূমি অবনমন বা ভূমিকম্পের কারণে এলাকা বসে যায়। ফলে ঐ সকল এলাকায় নতুন করে পললায়িত হতে পারে। গঙ্গা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র নদীর ক্যাচমেণ্ট এলাকা ১৬ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। বিভিন্ন নদীর পানিতে বয়ে আনা ২৩০-২৫০ কোটি টন পলি সমুদ্রে পতিত হয়। যা জোয়ারে প্রায় ২০০ কিলোমিটার অভ্যন্তরে নিম্নভূমিতে পললায়িত করত।
পোল্ডার হওয়ার পর ৮০০০ বর্গ কিলোমিটার জোয়ারের প্লাবন ভূমি অবরুদ্ধ হওয়ায় নদী বাহিত পলি নদী বক্ষে জমতে থাকে। ফলে নিম্নভূমির গঠন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই নদী তার নাব্যতা হারাচ্ছে। এছাড়া উজানের পানি হ্রাস, ভূমিকম্প ও পানি প্রত্যাহারের কারণেও নদীর নাব্যতা হ্রাস পায়। উজানের পানি দ্বারা ভাগিরতির পূর্বপার হতে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল শতভাগ হাইড্রোমোরফো লজিক্যাল, ইকোসহ সার্বিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। প্রায় ৭০০ বছর পূর্বে দক্ষিণ-পশ্চিম জোনের পোল্ডার এলাকায় পটুয়াখালি ও বরগুনার মতই মিষ্টি পানি ছিল। ১৭৮৭ সালে গ্রেট বেঙ্গল ভূমিকম্প অনেক নদীর উৎস মুখ উঁচু হওয়ায় অনেক নদীর প্রবাহে পরিবর্তন ঘটে।
গঙ্গার গতিপথ পরিবর্তনে ভাগিরথী, ভৈরব, জলঙ্গি, মাথাভাঙ্গা, হিসানী, গড়াই, কালিগঙ্গা, চন্দনা, মধুমতি, বারাশিয়া, কুমার, নবগঙ্গা, চিত্রা, কপোতাক্ষ, হরিহর, ভদ্রা, মুক্তেশ্বরী এবং এদের শাখা-প্রশাখায় মিষ্টি পানির প্রবাহ কমে যায়। গঙ্গা পূর্ব দিকে চলতে থাকায়, পলি পড়ে দক্ষিণ তীরের উচ্চতা বাড়তে থাকে। পর্যায়ক্রমে উৎসমুখ ভরাট হতে থাকে। একই সাথে ভারতে কৃষি ও শিল্পে পর্যাপ্ত পানি ব্যবহারের ফলে নদীতে পানির প্রবাহ কমতে থাকে। ফলে ভারত ড্যাম, জলাধার ও সর্বপরি ফারাক্কা বাঁধ তৈরী করায় দক্ষিণ-পশ্চিম জোনের ছোট-বড় সকল নদীতে পানি প্রবাহের ব্যাপক অবনতি ঘটে। উজানের মিষ্টি পানি কমে যাওয়ার কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সকল নদীতে লবণাক্ততা বেড়ে যায়। জোয়ারের সময় সুন্দরবনের বনভূমি পলিযুক্ত ও লবণাক্ত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শ্বাসমূল ডুবে যায়, সে কারণে সুন্দরবনের সুন্দরী গাছ মারা যাচ্ছে।
ভূমির নিম্নগামিতা বর্তমান জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। পলি গঠিত অঞ্চলে উপরিভাগের চাপে ক্রমশঃ নিম্নগামিতা হয়। তবে পোল্ডার এলাকায় এর হার একটু বেশী। পূর্বে এই নিয়মে ভূমির নিম্নগামিতা থাকলেও জোয়ারের পানিতে আসা পলির মাধ্যমে তা পুরণ হয়ে যেত; এজন্য অনুমেয় হত না। আজও যশোর-খুলনা অঞ্চলে মাটি খনন করলে ৭/৮ ফুট থেকে ১০/১২ ফুট মাটির নিচে গাছ-পালা পাওয়া যায়। ভূমিগঠন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পূর্বেই লবণাক্ততা ও বন্যা ঠেকানোসহ বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পুরণের জন্য ওয়াপদা বাঁধ নির্মাণ করে। এজন্য এ অঞ্চল পলিতে পুরণ না হতে পেরে সি-লেবেল থেকে আজ ৪৬ বছর পর প্রায় ৩ থেকে ৪ ফুট নিচু হয়েছে। ফলে দ্রুততার সাথে নিম্নাঞ্চল বাড়ছে। এছাড়া গ্রীনহাউস প্রতিক্রিয়ার ফলে বিশ্ব পরিবেশ ক্রমশঃ উত্তপ্ত হওয়ায় ভূ-পৃষ্ঠের বরফরাজি বেশী করে গলছে। ফলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের জলাবদ্ধতা একটি স্থায়ী রূপ নিয়েছে। এটা এখন এ অঞ্চলের মানুষের গলার কাটার ন্যায় বিঁধে আছে। এ সমস্যা নিরসনের জন্য বিভিন্ন চিন্তা-ভাবনা চলছে। বিশেষ করে যশোরের দুঃখ নামে খ্যাত ভবদহ এলাকায় বিল খুকশিয়ায় ৮৪৮ হেক্টর জমিতে পরিক্ষামূলক “টাইডেল রেভার ম্যানেজমেণ্ট” (টিআরএম) প্রকল্প চালু করে পলি অবক্ষেপনের মাধ্যমে নিম্নভূমি স্থায়ীভাবে উঁচু করার সিদ্ধান্ত করা হয়। ছয় বছর এই প্রকল্প চালু ছিল। এই সময় উল্লেখিত জমিতে ৯৩ ‘তিরানব্বই লক্ষ’ ঘনমিটার পলি অবক্ষেপিত হয়েছে। যার গড় উচ্চতা ০১ মিটার। এছাড়াও ১৬৫ কিলোমিটার নদীর নাব্যতা ফিরে আসে ও ৬০ টি রেলুলেটর কার্যকর হয়। এছাড়া প্রতিবছর ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ধান, মাছ, সবজী উৎপন্ন হয়। একই সাথে ১৫ লক্ষ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এলাকার অবকাঠামো কার্যকর ছিল। পলি ব্যবস্থাপনা না থাকায় পলি বিন্যাস্ত হতে পারেনি বলে অধিক পলি অবক্ষেপিত হতে হয়নি। পলি’র সঠিক বিন্যাস্ত করতে পারলে আরও অধিক জমি ভরাটের সম্ভাবনার পাশাপাশি নদীর নাব্যতাও বাড়ত। এটা বড় আশার কথা। বিল খুকশিয়া হরি নদীর বেসিনটি ছিল মাত্র ৮৪৮ হেক্টর এবং মেয়াদ ছিল ৬ (ছয়) বছর। সঠিক পলি ব্যবস্থা না থাকা সত্বেও ১৬৫ কিলোমিটার মৃতপ্রায় নদীর নাব্যতা ফিরে আসা আমাদের আশার সঞ্চর করে। আমরা আশা করতে পারি এখনও যে সব মৃতপ্রায় নদীতে জোয়ার- ভাটা চলছে; সেগুলো নদীর পাশে পলি ব্যবস্থাপনা সংযুক্ত করে টিআরএম চালু করতে পারলে সংশ্লিষ্ঠ নদীগুলি বাঁচানো সম্ভব। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে ৫ (পাঁচ) টি বড় নদী আছে । এগুলো হলঃ শিবশা, পশুর, আরপাঙ্গাশিয়া (রায়মঙ্গল+ মালঞ্চ) ও বলেশ্বর। এই নদীগুলোর অনেক শাখা-প্রশাখা রয়েছে। যেমন- রায়মালে মালঞ্চ, ইছামতি, কাকশেয়ালী, সাপমারা হাবড়া, গোয়ালঘেশিয়া, শাক বাড়িয়া, কয়রা, কপোতাক্ষ প্রভৃতি।
এই অঞ্চলে বছরে আগত পলির পরিমাণ প্রায় ০১ কোটি ঘনমিটার। দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ৭/৮ টি নদীর বেসিনে টিআরএম করে নিয়ন্ত্রিত পলি উত্তোলনের মাধ্যমে এ অঞ্চলের নদীগুলি বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। “বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন”-এ ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা রাখতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নদীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নিম্নে কতকগুলি সুপারিশ পেশ করছি।
১) “নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে” এই স্লোগানে বাংলাদেশের সমস্ত মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
২) বাংলাদেশে প্রবাহমান নদীগুলি জরিপ
করে তালিকা তৈরী করতে হবে। যে নদীগুলোতে এখনও ক্ষীণ প্রবাহ বিদ্যমান সে
গুলি চিহ্নিত করে সেই নদীর বেসিনে পলি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নদীর নব্যতা
ফিরিয়ে আনতে হবে।
৩) প্রবাহমান নদীর স্রোতে বাঁধা সৃষ্টি
করে এমন সেতুর পিলার অপসারন করতে হবে; সম্ভব না হলে কমিয়ে আনতে হবে।
পাশাপাশি স্রোতে প্রতিবন্ধকতার কারণ হয় এমন মাছ ধরার উপকরণসহ সকল বাঁধা দূর
করতে হবে।
৪) নদীতে পলি পড়ে স্রোতে যে সকল স্থানে বাঁধা সৃষ্টি করে এমন স্থান সমূহে ড্রেজিং করে নদীতে প্রবাহ বাড়াতে হবে।
৫) উজানের পানি প্রবাহ যাতে বৃদ্ধি পায় সেজন্য ভারতসহ প্রতিবেশী দেশসমূহের সাথে যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
উপরের সুপারিশগুলো বিবেচনা করে, অতিদ্রুততার সাথে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের (যশোর-খুলনা) নদীগুলি বাঁচানোর পদক্ষেপ নিতে বিলম্ব হলে, মৃতপ্রায় নদীগুলোকে পুনঃজীবিত করা সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে আগামী ৫০/৬০ বছরে এ অঞ্চল পুরোপুরি জলময় হয়ে যাবে। ‘বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন’ তাদের কর্মের মাধ্যমে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এমন আশা ব্যক্ত করে এখানেই শেষ করছি।
মোঃ রুহুল আমিন
অধ্যক্ষ, পাঁজিয়া ডিগ্রী কলেজ, ডাকঘরঃ পাঁজিয়া, উপজেলাঃ কেশবপুর, জেলাঃ যশোর।
সাংবাদিক ও কলামমিস্ট।
মোবাঃ ০১৭১৮-৬১১৫৫০, ই-মেইলঃ ruhulamin0655@gmail.com
পত্র প্রাপ্তির ঠিকানাঃ
মোঃ রুহুল আমিন (অধ্যক্ষ), গ্রাম- আলতাপোল (অফিস পাড়া), উপজেলা রোড, উপজেলা মসজিদ সংলগ্ন, ডাকঘর- কেশবপুর, জেলা- যশোর।